বিতর্কিত গায়ক মইনুল আহসান নোবেলকে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ফারজান আরশি। এছাড়া নোবেল জোর করে নেশা করিয়ে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো তুলেছেন বলেও দাবি করেন এই তরুণী।

বুধবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এমনটা দাবি করেন তিনি। স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছু সময় পরই সেটি মুছে ফেলেন। তবে আরশির ওই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ইতোমধ্যে নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

গত সোমবার আবারো বিয়ের ঘোষণা দেন নোবেল। ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে ফারজানা আরশি নামে এক তরুণীকে বিয়ের দাবি করেন তিনি।

এর আগে রোববার রাতে আরশির সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন নোবেল। যেখানে তাদের দুজনকে বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই দেখা যায়।

এর দুদিন পরই বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দেন আরশি। তিনি বলেন, ‘আমি এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে আছি যে, আমার সবকিছু স্বাভাবিক নেই। আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েছি; তারপরও আপনাদের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করছি সবকিছু ক্লিয়ার করার জন্য। আমি খুলনায় বিভিন্ন ব্লগ করে থাকি, সেজন্য একটি ভিডিও কন্টেন্ট বানানোর উদ্দেশ্যে নোবেলের বাড়ি গোপালগঞ্জে যাই। আমার সঙ্গে আমার এক বান্ধবীও ছিল। ওখানে যাওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যায়। নোবেল তার মায়ের সামনেই আমার গলায় ছুরি ধরে এবং আমার ফোনটি কেড়ে নেয় এবং জোর করে আমাকে ঢাকায় তার বাসায় নিয়ে যায়। আমাকে বিভিন্ন ড্রাগ জোর করে সেবন করায় এবং মারধর করে। আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’

আরশি আরও বলেন, পরবর্তীতে ডেমরা থানায় আমাকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে একটা জিডি করায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে আমার বাবা এবং কাজিন উদ্ধার করতে গেলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি নোবেলের কথামতো ভয়ে পুলিশকেও মিথ্যা বলি- তখন আমার শরীরে ড্রাগ পুশ করা ছিল। পরে গোপালগঞ্জ থেকে আমার পরিবার আমাকে উদ্ধার করে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নোবেল জোর করে নেশা করিয়ে আমাকে দিয়ে ওই ছবিগুলো তুলেছে। নোবেলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি এবং কোনো সম্পর্কও নেই। আমি পরিবেশ এবং পরিস্থিতির শিকার।’

সবশেষে আরশি বলেন, ‘আমি এবং আমার পরিবার খুব ভয়ভীতির মধ্যে আছি। আমি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি একটি মেয়ে, আমি আমার পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চাই।’

এ বিষয়ে ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফারুক মোল্লা রাতে যুগান্তরকে বলেন, আরশি স্বেচ্ছায় গায়ক নোবেলের কাছে এসেছেন। এ নিয়ে মেয়েটির মা-বাবা নোবেলের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করলে তদন্ত শুরু করি।

তিনি বলেন, পরে এ ঘটনায় আরশি থানায় এসে লিখিতভাবে জানান যে, তিনি সম্পর্কের পর স্বেচ্ছায় নোবেলের কাছে এসেছেন। এক্ষেত্রে তার বাবা-মা যদি নোবেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন তিনিও আইনের পথে হাঁটবেন। এতকিছুর পরও কেন বিয়ে অস্বীকার করে আরশি স্ট্যাটাস দিয়েছেন- সেই বিষয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা কিছু জানেন না বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আরশির গ্রামের বাড়ি খুলনায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গায়কের সঙ্গে পরিচয় তার। এরপর একাধিকবার নড়াইলে দুজন দেখাও করেছেন। সেখান থেকেই তাদের সম্পর্কের শুরু।

আরশি এর আগেও একটি বিয়ে করেছেন। তার স্বামী একজন ফুড ব্লগার। গত বছরই বিয়ে হয়েছিল তাদের। নোবেলের সঙ্গে আরশির একাধিক ছবি ফাঁসের পর তার প্রথম সংসার নিয়েও আলোচনা চলছে। যদিও সেই স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নোবেলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে আরশির সঙ্গে বিয়ের খবর প্রকাশ করবেন এই গায়ক।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর নোবেলের সঙ্গে বিয়ে হয় মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদের। একই বছরে ভারতের জি বাংলার সংগীত রিয়েলিটি শোতে ‘সারেগামাপা’ অংশ নিয়ে আলোচনা আসেন এই গায়ক।

বিয়ের কয়েক বছর পরেই নোবেলকে ডিভোর্স দেন সালসাবিল। সেই সময় এই গায়কের স্ত্রী অভিযোগ করেন, নোবেল মানসিকভাবে অসুস্থ, মাদকাসক্ত, আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করত। এসব কারণে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওর সঙ্গে সংসার করা সম্ভব না।